
রাসেল কবির//বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার কাজিরহাটে আদালতের নির্দেশ অমান্য করে বিরোধপূর্ণ জমিতে জোরপূর্বক পাকা ভবন নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে মোজাম্মেল সিকদার নামের এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে।
বিবাদী মোজাম্মেল সিকদার আদালতের নিষেধাজ্ঞার পর থেকে রাতের আঁধারে ভবন নির্মাণের কাজ করে যাচ্ছেন। এ নিয়ে এলাকায় মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হলেও আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্যকারীদের ভয়ে অসহায় ভুক্তভোগী পরিবার।
এর আগে গত ৮ অক্টোবর কাজিরহাট থানা পুলিশের এ,এস,আই ইলিয়াস হোসেন উভয় পক্ষকে নোটিশের মাধ্যমে আদালতের আদেশের বিষয়টি অবগত করেন। কিন্তু মোজাম্মেল সিকদার নোটিশ পেয়েও স্থানীয় কিছু লোকের সহায়তায় আদালতের আদেশ উপেক্ষা করে বিরোধপূর্ণ জমিতে বাড়ি নির্মাণের কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।
রাতের আঁধারে ভবন নির্মাণ অব্যাহত রাখার বিষয়টি বেশ কয়েকবার কাজিরহাট থানা পুলিশকে অবহিত করা হলেও বিবাদীর বিরুদ্ধে এখনো পর্যন্ত কোন ব্যবস্থা নেয়নি পুলিশ বলে অভিযোগ করেন মামলার বাদী আবু সাঈদ।
স্থানীয় ও মামলার সূত্রে জানা গেছে , মামলার বাদী , বিবাদী সম্পর্কে চাচা ভাতিজা, বাদীর দাদা মৃত আসমত আলী সিকদারের গেল শতাব্দীর শেষের দিকে মৃত্যু হলে এখন অব্দি তার সম্পত্তি সঠিকভাবে তার ওয়ারিশগণের নিকট বন্টন করা হয়নি। বিবাদী মোজাম্মেল সিকদার ইতিপূর্বে তার পৈত্রিক সূত্রে পাওয়া সকল সম্পত্তি তার নিকট ওয়ারিশগণের কাছে বিক্রি করে নিঃস্ব হয়ে পড়লে, তার বড় ভাই মৃত আবদুল মন্নান সিকদার বসত ঘর করার জন্য তাকে ২ শতাংশ জমি ফেরত দেয়। জমি ফেরত পেয়ে তিনি সেই জমিতে ইটের ভবন নির্মাণ করেন।
বাদীর বাবা জয়নুল আবেদিন ও তার বড় চাচা মন্নান সিকদারের মৃত্যুর পরেই বেপরোয়া হয়ে ওঠে মোজাম্মেল সিকদার ও তার পুত্র গং।
তারা অমীমাংসিত বাড়ির জমি দখল করার লক্ষ্যে রাতের আঁধারে ভবন নির্মাণের কাজ শুরু করে। বাদী ও অন্যান্য ওয়ারিশগণ পেশাগত কাজের তাগিদে দূরে অবস্থান করার সুযোগ নিয়ে তারা এই পরিকল্পনা সাজায়।
খবর পেয়ে বাদী আবু সাঈদ গত ০৭/১০/২০২৫ ইং
তারিখে বিজ্ঞ আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন।
মামলায় তিনি উল্লেখ করেন, তার দাদার সম্পত্তি কাজিরহাট থানার জে,এল ১১ নং চর সন্তোষপুর মৌজার বি এস ১৮৬ নং খতিয়ানে যাহার বি এস ২৩৫৪ নং দাগে ৭৭ শতাংশ জমি রয়েছে যাহার মধ্যে ৭৫ শতাংশই বিরোধীও রয়েছে। এই বিরোধপূর্ণ জমিতে তার চাচা মোজাম্মেল সিকদার ও তার ছেলে সোহাগ সিকদার রাতের আঁধারে স্থানীয় কিছু লোকজন নিয়ে ইটের ভবন নির্মাণ কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।
মামলাটি বিজ্ঞ আদালত আমলে নিয়ে গত ০৭/১০/২০২৫ ইং তারিখে আদালতের স্মারক নং ৪১৫৩ এর আদেশ মোতাবেক উক্ত বিরোধপূর্ণ তফসিল বর্ণিত সম্পত্তিতে যে সকল কাজ দ্বারা শান্তি-শৃঙ্খলা ভঙ্গের সম্ভাবনা রহিয়াছে সেই সকল কাজ হইতে বিরত থাকার জন্য উভয় পক্ষকে নির্দেশ প্রদান করে। বিজ্ঞ আদালত পরবর্তীতে ০১/১২/২০২৫ ইং শুনানির তারিখ ধার্য করে।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে একাধিকবার কল দেওয়া হলেও ফোন না ধরায় মামলার বিবাদী মোজাম্মেল সিকদারের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
বাদীকে নোটিশ প্রদানকারী থানার এ,এস,আই ইলিয়াস হোসেন জানায়, তিনি উভয় পক্ষকে নোটিশের মাধ্যমে যাঁর যাঁর অবস্থানে থাকার কথা ইতিপূর্বে জানিয়ে আসছেন। এখন তারা সেটা না মানলে আইনত অপরাধ করতেছেন।
এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে কাজিরহাট থানার ভারপ্রাপ্ত ওসি তদন্ত দীপঙ্কর জানায়, ফৌজদারি কার্যবিধি ১৪৪/১৪৫ আইনে আদালতে মামলা দায়ের করলে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য আদালতের আইন মান্য করে ঘটনা স্থলে গিয়ে চলমান কাজ বন্ধ রাখাটা আমাদের কর্তব্য। তবে বর্তমানে সেখানে কী হচ্ছে তা তাঁর জানা নেই।
Leave a Reply